ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

নিষিদ্ধ করা সেই ৩৮ দালাল ফের ভূমি হুকুম দখল অফিসে

dalসৈয়দুল কাদের ।।

কক্সবাজার জেলা ভূমি হুকুম দখল অফিসে কর্তৃক বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা ৩৮ দালাল ফের দখল করেছে জেলা ভুমি হুকুম দখল অফিস। এই চিহ্নিত ৩৮ দালালের উপর নিষেদাজ্ঞা জারি করলেও তা লোক দেখানো বলে মনে করছেন জমির মালিকরা। তাদের অভিযোগ দালালের কারণে কোন ভাবেই স্বস্তি পাচ্ছেন না তারা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় গত ৩ এপ্রিল নিয়মিত যাতায়তকারী ৩৮ দালালের তালিকা প্রকাশ করেন জেলা ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা আবু আসলাম। তিনি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলেন, দালালদের মাধ্যমে কোন কিছু না করার জন্য সকলকে সর্তক করা হল। প্রকাশিত তালিকাভুক্ত কোন দালাল অন্যকোন ব্যক্তির জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের আশেপাশে ঘুরাঘুরি করলে তাদের গ্রেপ্তার পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এমন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এখন ভুমি হুমুক দখল অফিসে ঠিক উল্টো পরিবেশ বিরাজ করছে। ভুমি হুকুম দখল অফিসের কর্মকর্তারাই ডেকে নিয়ে আসছেন দালালদের।

একজন জমির মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, অফিসে কয়েক দিন দালাল না আসায় বেসামাল হয়ে পড়েন ভূমি হুকুম দখল অফিসের কর্মকর্তারা। তাদের আয় কমে যাওয়ায় দালালদের বিভিন্ন ভাবে ডেকে এনে জমির মালিকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে অফিসের আশপাশে রেখেছেন কর্মকর্তারা।

গতকাল বেলা ১১টায় ভূমি হুকুম দখল অফিসে গিয়ে দেখা যায় তালিকাভুক্ত দালাল সাহাব উদ্দিন, মাতারবাড়ি খোরশেদ আলম, ফজল কাদের, আমির খলিফা, আলি মিয়া, শাহাদত হোসাইন, ছৈয়দ নুর, আবুল কাশেম, মৌলভী বশর, মো. রফিক প্রকাশ ভেন্ডার রফিক, নুরুল আবচার, আবু ছালেক, হাজি ফরিদ, মো. মামুন, হেলাল উদ্দিন, মোস্তাফিজ, রনি, হোছাইন, মুছা, আরেফ আলী, আবুল হাশেম, সাদ্দাম হোসাইন, হাজী ছৈয়দ, নুরুল আবছার, শফিক,  আমান উল্লাহ, মো ইব্রাহিম, সোহেল, আবদুল মতিন, আছাদ উল্লাহ, হাবিবুর রহমান, সরওয়ার, দিদার, চট্টগ্রামের মুছা, ঢাকার মিঠুন, আহাদ, উখিয়ার হেলাল উদ্দিন ও জামায়াত বশর ভুমি হুকুম দখল অফিস ঘিরে রেখেছেন।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, তালিকাভুক্ত এই দালালদের কারণে প্রতিনিয়ত লোকজন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নিজস্ব সম্পত্তির টাকা উঠাতে গিয়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন। দালালদের খপ্পরে পড়ে কেউ কেউ বসতবাড়ি বিক্রি করেন বলে জানা গেছে।

এদিকে ২২৮ নং রোয়েদাদে মিথ্যা দলিলের ভিত্তিতে টাকা উত্তোলন করতে অনেক দিন যাবৎ চেষ্টা চালাচ্ছেন মাতারবাড়ির মৃত হাজী লোকমান হাকিমের পুত্র হাজী জাকের হোসেন। এ ব্যাপারে হাজী লোকমান হাকিমের অপরাপর ওয়ারিশরা খবর পেয়ে উক্ত রোয়েদাদের বিরুদ্ধে আপত্তি করলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। জমির মালিকরা প্রশাসনের ধারে-ধারে ঘুরলেও কোন সুরাহা হচ্ছে না।

এদিকে কানুনগো দিদার জানিয়েছেন, উভয় পক্ষের  উপস্থিতিতে শুনানির মাধ্যমে ২২৮ নং রোয়েদাদের মিথ্যা দলিলের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে। তিনি আরো বলেন, হাজী জাকের হোসেন হাজির না হওয়ায় বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না।

জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আনোয়ারুল নাসের জানান, বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

পাঠকের মতামত: